...
ই-নলেজ অতিক্রম করলো লক্ষাধিক সদস্যের এক বিশাল মাইলফলক!বিস্তারিত...

বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট?

"অন্যান্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন (অতিথি) (6 পয়েন্ট)   45 বার প্রদর্শিত
জানুয়ারি ২০২৪, বাংলাদেশ। এই স্থান-কালের প্রেক্ষাপট এখানকার শিক্ষিত সচেতন মুসলিমদের কাছে একেবারেই স্পষ্ট। কিন্তু মূল আলাপে যাবার আগে দীর্ঘকালীন ফায়েদার বিবেচনায় (খুবই সংক্ষেপে) প্রেক্ষাপটের প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো একবার উল্লেখ করে দেওয়াই সমীচীন মনে করছি ইন শা আল্লাহ।
.
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু মাস আগে থেকেই ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্য আমেরিকা বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রচলিত গণতান্ত্রিক সিস্টেমকে হ্যাক করে পর পর তিনবার শাসনক্ষমতায় থাকার পর চতুর্থবার শাসনক্ষমতায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারকে সাধারণ নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য অবরোধ সহ নানামুখী চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
.
বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি - যারা কিনা আরেক সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী দল - তাদের সাথেও আমেরিকার যোগসূত্রের বিভিন্ন গুঞ্জন ওঠে। বিএনপি-পন্থী অনেক অ্যাক্টিভিস্টরা স্পষ্টভাবেই আমেরিকার সাহায্যের ব্যাপারে খোলাখোলি কথা বলে যায়। এভাবে চলতে চলতে এটা অন্তত দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তারা আমেরিকার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতন করে শাসনক্ষমতায় যেতে চায়। আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সুকৌশলী আমেরিকাও নিজের বিভিন্ন স্বার্থে সেবার বিএনপিকে শাসনক্ষমতায় দেখতে চায়। বিভিন্ন ঘটনা আর রটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচী এবং আন্দোলন করতে থাকে।
.
একইসাথে গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামি শরিয়াহ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাওয়া বিভিন্ন ইসলামি দলও বিএনপির আন্দোলনের সাথে অনেকটাই একাত্নতা ঘোষণা করে। অবস্থা এমন হয় যে, গণতান্ত্রিক পন্থায় ইসলামি শরীয়াহ কায়েমের জন্য কাজ করে যাওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও আমেরিকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতাকে পুঁজি করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সাথে কোনোরকমে জোটবদ্ধ হয়ে হলেও শাসনক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন বুনতে থাকে। এমতাবস্থায়, ইসলামি শাসন কায়েমের জন্য কাফিরদের নির্ধারণ করে দেওয়া সিস্টেমের ভেতর থেকে তাদের হস্তক্ষেপমূলক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা গ্রহণ করা বৈধ কি না সে বিষয়ক শরয়ী আলাপে যদি নাও যাই, তবুও বাস্তবতার আলোকে এটা কতটুকু কার্যকর ও ফলপ্রসূ সে বিষয়ে আমাদের সরল মনের আন্তরিক কিছু আলাপ আমরা গণতান্ত্রিক ইসলামি দলগুলোর ‘আন্তরিক’ ভাইদের উদ্দেশ্যে রাখতে চাই।
.
বাংলাদেশে প্রায় ১৫ বছর শাসনক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ তো অন্তত আভ্যন্তরীণভাবে চরম শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকার মতো পরাশক্তি যখন চায় না, তখন আওয়ামী লীগেরও ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। আবার দেশটির প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এত শক্তি নিয়ে আন্দোলন করলেও ঘুরেফিরে আমেরিকার হস্তক্ষেপের আশাতেই বুক বাঁধে। এখানে শাসনক্ষমতায় আসা কিংবা টিকে থাকার জন্য গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা যে আদৌ মুখ্য নয়, তা আরেকবার দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার তো ঠিকই এই সিস্টেমকে হ্যাক করে দুইবার (২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে) জোর করে শাসনক্ষমতায় থাকতে পেরেছিল। কেন পেরেছিল? কারণ গণতন্ত্রের দেবী আমেরিকা সেই দুইবার বাদ সাধেনি, কারণ সেসময় গেরুয়া সন্ত্রাসী ভারত নিজের স্বার্থে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকেই সমর্থন দিয়েছিল।
.
সহজভাষায় বললে, বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি রাষ্ট্রে বিদ্যমান কাঠামোর অধীনে থেকে শাসনক্ষমতায় যাওয়াটা যে আন্তর্জাতিক পরাশক্তি (যেমন: আমেরিকা) কিংবা আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তির (যেমন: ভারত) সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল, সেটা বাংলাদেশের ২০২৪ সালের নির্বাচনে যতটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, তা যেন এখানকার ইতিহাসে আর কোনো সময়েই অতটা হয়নি।
.
গণতন্ত্রের মানহাজ অবলম্বন করা বিভিন্ন ইসলামি দলের চিন্তাশীল আন্তরিক ভাইয়েরা খুব ভালোভাবেই এই ব্যাপারগুলো উপলব্ধি করেন। তাহলে প্রশ্ন হলো, এভাবে শাসনক্ষমতায় গিয়ে প্রকৃত ফায়দা কোথায় যখন আমাদের কাছে স্পষ্ট যে আন্তর্জাতিক কিংবা আঞ্চলিক কোনো কুফরি শক্তির অনুমোদনেই সেই শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হয়? এভাবে শাসনক্ষমতায় গিয়েও ‘সত্যিকার ও পূর্ণাঙ্গ ইসলামি শরীয়াহ’ কীভাবে ফিরিয়ে আনা যাবে যখন এই ব্যাপারে আমাদের সামনে মিশর, আলজেরিয়া, এমনকি তুরস্কের মতো ব্যর্থতার উদাহরণ রয়েছে? সত্য হলো – একালের ফিরাউন পশ্চিমা সভ্যতার বিরুদ্ধে জি@হা@দকে এড়িয়ে যাওয়ার, নববী মানহাজকে পরিত্যাগ করে ওদেরই প্রচলন করা তন্ত্রমন্ত্রকে মেনে নেওয়ার অনিবার্য ফল হলো এটা। কুফরি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে নববী সংঘাতকে এড়িয়ে যেতে যেতে একসময় ওদেরই অনুমোদন আর সাহায্যের দিকে তাকিয়ে থাকার পরিণতি বরণ করে নিতে হয়। আর কখনও কোনো কালে শাসনক্ষমতায় গিয়ে পৌঁছলেও ইসলামি শরীয়াহ আর কায়েম না করে পশ্চিমা শয়তানদেরকে খুশি রেখেই টিকে থাকতে হয়। নইলে যে এত বছরের রাজনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে!
.
প্রিয় ভাইয়েরা, আল্লাহর ইবাদাত একমাত্র তাঁরই নির্দেশিত পন্থায়, তাঁর রাসূল ﷺ-এর দেখানো উপায়ে করলেই কবুল হবে। তাহলে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের ইবাদাত কেন আমরা নুসুসের সুস্পষ্ট পন্থা জি@হা@দ ফি সাবিলিল্লাহকে বাদ দিয়ে ইজতিহাদ করে মানবসৃষ্ট তন্ত্রমন্ত্রকে বেছে নিব? আফসোস গণতন্ত্রকে মানহাজ বানানো বিভিন্ন ইসলামি দলের ভাইদের জন্য। কুফরি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যে ধরনের সংঘাতকে তারা শুরুতেই আপাত অসম্ভব বলে ইজতিহাদ করে গণতন্ত্রের মানহাজ বেছে নেন, গণতান্ত্রিক প্রতিপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে একসময় তারা সেই ধরনের সংঘাতেই গিয়ে লিপ্ত হন। [১] যে আত্নত্যাগ তারা দ্বীন কায়েমের নববী মানহাজ জি@হা@দ@কে বেছে নিয়ে সরাসরি আল্লাহর রাহে করতে পারতেন, সেই ধরনের আত্নত্যাগই তারা কিনা কখনও পশ্চিমা তন্ত্রমন্ত্র ফিরিয়ে আনা তো আবার কখনও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের রাহে করেন। আর প্রায় শত বছর ধরে সেই একই চক্রে ঘুরপাক খাওয়া এখনও চলছে তো চলছেই।
.
শুধু বাংলাদেশের হিসেব করলেও, ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্নপ্রকাশের পর ১৯৭৯ সালের মে মাসে ইকামতে দ্বীন বা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের লক্ষ্যে নতুন উদ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি – জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর রাজনীতি শুরু হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক চড়াই উতরাই দেখা গিয়েছে। এমনকি সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যজোট করে জামায়াতে ইসলামী দলটি বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় কিছুটা অংশও নিয়েছে। কিন্তু ১৯৭৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছরের গণতান্ত্রিক মানহাজে সেই যে ইকামতে দ্বীন বা দ্বীন কায়েমের মূল লক্ষ্য – তা আজোবধি এই জমিনের কোথাও এক মুহুর্তের জন্যও অর্জিত হয়নি।

সম্পূর্ণ পড়তেঃ  https://shorturl.at/bCNS1

image

লিংক কপি হয়েছে!

আপনার লেখাটি https://idea.enolej.com ই-নলেজ আইডিয়াতে প্রকাশ করুন, এখানে শুধুমাত্র প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায়।অপরদিকে ই-নলেজ আইডিয়া তৈরি ই করা হয়েছে আপনাদের লেখালেখির জন্য।
https://idea.enolej.com/write
মন্তব্য করা হয়েছে করেছেন (নবীন) (41 পয়েন্ট)  


1 উত্তর

0 পছন্দ 1 টি অপছন্দ
  বাংলাদেশ এর বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে যে বিবরণ পড়লাম তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে আমার এই লেখা।

বাংলাদেশ এর রাজনীতিতে বি এন পি দলের পক্ষ নিয়ে আমেরিকার নানান ধরনের বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে বি এন পি এর মধ্যে দেশপ্রেম এর অভাব রয়েছে।

আমেরিকার মদতপুষ্ট দল দেশের জন্য কাম্য নয়। 

আবার চীনের মদতপুষ্ট আওয়ামী লীগ ও দেশের জন্য কাম্য নয়। তাই তাই

বিশেষ করে চীন চাইছে যে, বাংলাদেশ হয়ে উঠুক ভারত চীন যুদ্ধের জন্য একটি রণ ভূমি বা যুদ্ধক্ষেত্র ।

এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে কট্টরপন্থী কিছু লোক আখেরি গুটাতে ।
উত্তর প্রদান করেছেন (অতিথি) (13 পয়েন্ট)  

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুচ্ছ

2 টি উত্তর
"বাংলাদেশ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন MdAUKhan (বিশারদ) (3,501 পয়েন্ট)  
2 টি উত্তর
1 উত্তর
2 টি উত্তর

18,582 টি প্রশ্ন

19,470 টি উত্তর

2,568 টি মন্তব্য

102,920 জন সদস্য

ই-নলেজ কুয়েরি বাংলা ভাষায় সমস্যা সমাধানের একটি নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট। এখানে আপনি প্রশ্ন-উত্তর করার মাধ্যমে নিজের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি দিতে পারেন অন্যদের সমস্যার নির্ভরযোগ্য সমাধান! বিভিন্ন ব্যক্তিগত সমস্যা, পড়ালেখা, ধর্মীয় ব্যাখ্যা, বিজ্ঞান বিষয়ক, সাধারণ জ্ঞান, ইন্টারনেট, দৈনন্দিন নানান সমস্যা সহ সকল বিষয়ে প্রশ্ন-উত্তর করতে পারবেন! প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে বাংলা ভাষায় উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য!
তাই আজই যুক্ত হোন ই-নলেজে আর বাড়িয়ে দিন আপনার জ্ঞানের গভীরতা...!
Empowering Novel Learners with Zeal (Enolez)



  1. Enolej Official Team

    75 টি পরীক্ষণ কার্যক্রম



  2. MdAUKhan

    1 টি পরীক্ষণ কার্যক্রম



  1. Dany Basset

    100 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    0 টি প্রশ্ন

  2. Mehdi Cassonnet

    100 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    0 টি প্রশ্ন

  3. Enolej Official Team

    25 পয়েন্ট

    4 টি উত্তর

    2 মন্তব্য

    4 টি প্রশ্ন

  4. ইফতেখার নাইম

    20 পয়েন্ট

    4 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    3 টি প্রশ্ন

  5. TamimAdnani

    6 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 মন্তব্য

    1 প্রশ্ন

...